এডভোকেট জহিরুল ইসলাম ও আমার কিছু কথাঃ মুজিবুর রহমান


আমি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ ও মেয়র কক্সবাজার পৌরসভা। আমার মতো একজন নগন্য রাজনৈতিক কর্মীর

নামের পাশে এসব গুরুত্বপূর্ণ বিশেষন বিশেষায়িত হওয়ার পেছনে যে ক’জন মুরব্বির সবচেয়ে বেশি অবদান তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন এড.জহিরুল ইসলাম। আমার পিতৃতুল্য সেই মানুষটি আজ নাই হয়ে গেলেন। (ইন্না-লিল্লাহ) আশা করছি তাঁর রেখে যাওয়া সব ভাল কর্ম আমাদের সুন্দর আগামী গড়তে পাথেয় হিসেবে কাজ কারবে। চলার পথে যোগাবে শৃংখলিত শান্তির অনুপ্রেরণা।

আশির দশকে যখন ছাত্র রাজনীতি শেখা শুরু করি তখন আমার মরহুম চাচা জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি একেএম মোজাম্মেল হক এবং এডভোকেট জহিরুল ইসলামই ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ অভিভাবক। এই দু’জন ক্ষনজন্মা ব্যক্তিত্ব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুবই ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। শ্রদ্ধেয় চাচা মোজাম্মেল হক ইন্তেকাল করেছেন প্রায় ১৫ বছর আগে। আর দু’হাজার ২০ সালে এসে আমাদের ছেড়ে চির বিদায় হয়ে গেলেন আরেক অভিভাবক শ্রদ্ধেয় জহিরুল ইসলাম।

মূলতঃ ওনারাই আমার রাজনীতির শিক্ষক। বিশেষ করে আমি যখন কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস নির্বাচন করি তখন আমাকে প্রথম উৎসাহ অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন এই জহিরুল ইসলাম। তাঁরই মুল্যবান পরামর্শ এবং দিক নির্দেশনায় হাজার প্রতিকূলতার মাঝেও আমি জিএস নির্বাচন করতে রাজি হই এবং সাফল্যের সাথে বিজয় অর্জন করি। সেই থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে আমি আজকের মুজিব। বাকি ইতিহাস কারও অজানা নয়।

প্রিয়নেতা, আপনি নেই মানে মনে হচ্ছে আমার কিছুই নেই। ভাবতেই পারছিনা, আপনার মতো একজন গুনি মানুষের প্রস্থানের মধ্যদিয়ে আজ থেকে আমিও অভিভাবক শুন্য হয়ে গেলাম। ভাবছি-জহিরুল ইসলামরা ঘুনে অন্ধকার সমাজকে বদলে দিতে একবারই পৃথিবীতে আসেন, তারা বারবার জন্মান না।

বর্ষীয়ান একজন রাজনীতিক হিসেবে আপনার কাছে বহু শিখেছি, আরও অনেক কিছু শেখার ছিলো। কিন্তু কিভাবে শিখি…?
জহিরুল ইসলাম নামে রাজনীতির সেই বটবৃক্ষ আর পাঠশালাটি যে আর দুনিয়াতে নেই…।
আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ট করুন, আমিন।

উল্লেখ্য, এডভোকেট জহিরুল ইসলাম একাধারে একজন প্রখ্যাত আইনজীবী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক গভর্ণর, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক জাতীয় পরিষদ সদস্য।
এড়াড়া সংবিধান প্রণয়নেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো।

আজ উপলব্ধি হচ্ছে এডভোকেট জহিরুল ইসলামের মৃত্যুতে জাতি একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিককে হারালো। যা কখনো পুরন হবার নয়।
লেখক: মেয়র, কক্সবাজার পৌরসভা ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, কক্সবাজার জেলা শাখা।

(লেখাটি মেয়রের ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে সংগৃহি)